Email:-bdgunman@gmail.com


নতুন মায়ের দৈনন্দিন যা যা করণীয়

নতুন মায়ের দৈনন্দিন মানসিক চাপ দূর করতেঃ

২৪ ঘণ্টার কাজ। কোনো বিশ্রাম নেই। আপনি কখন আরাম করবেন, তা নির্ধারণ করে দিচ্ছে ছোট্ট মানুষটি। হয়তো বয়স কয়েক মাস থেকে কয়েক বছরের মধ্যে। কিন্তু সারাদিন তার কাজ করতে গিয়েই নাজেহাল অবস্থা সবার। সাহায্য করার কেউ না থাকলে ধকল কিন্তু পুরোটা যায় মায়ের ওপর দিয়েই। কম ঘুম, না খেয়ে থাকা, বাড়ির অন্যান্য কাজ করা, বাচ্চার সব দায়িত্ব পালন করতে হয় মাকেই। এত ঝুট-ঝামেলায় নিজের দিকে তাকানোর সময় আর মেলে না। 

বাড়ির কাজ করা বাদ দিতে পারেন। নাইবা ধোয়া হলো কাপড়। এক-দুই দিন না হয় বাইরে থেকেই খাবার এনে খেয়ে নিলেন সবাই। কিন্তু ছোট্ট শিশুটির দেখাশোনা তো আর বন্ধ করা যায় না। তবে সেই সাথে কিছুটা সময় বের করে হলেও নিজের যত্ন নিতে হবে। যদিও সন্তান জন্ম নেওয়ার পর প্রথম ছয় মাস সময় বের করা কঠিন। যারা বাচ্চাকে শুধু বুকের দুধ খাওয়ান, তাঁদের জন্য বিষয়টি আরও দুষ্কর। তবুও চেষ্টা করুন নিজের জন্য সময় বের করতে। একটু হাঁটাচলা করুন। এই ৩০ মিনিটের হাঁটা দেখবেন অনেকটা জাদুর মতোই কাজ করবে। শরীর ও মন ভালো রাখবে। তাই যখনই সময় পাবেন একটু বিশ্রাম নিয়ে নিন।
সন্তানের ঘুম থেকে ওঠার ঘণ্টাখানেক আগে উঠুন। এতে কাজ গুছিয়ে নেওয়ার সময় পাবেন। তাছাড়া নিজের জন্য খানিকটা সময়ও বের করে নিতে পারবেন। 

ছোট্ট শিশু বড় করে তোলা অনেক স্ট্রেসফুল একটি কাজ। অনেক সময়ই নতুন মা-কে দেখা যায় ডিপ্রেশনে ভুগতে। তাই পরিবারের সব সদস্যকে এগিয়ে আসতে মা-কে সাহায্য করতে। এছাড়াও মা যেন নিজের মত করে কিছু সময় কাটাতে পারে সে ব্যাপারেও সাপোর্ট দিতে হবে। 

আর মায়েদের উচিত নিজের পছন্দমত কিছু কাজ খুজে বের করা। হয়তো ছোটো বেলায় আপনি গান শিখতেন বা ছবি আঁকতেন। বড় হওয়ার পর কাজের চাপে বা সংসারের বিভিন্ন ঝক্কি-ঝামেলায় এগুলো আর করা হয়ে উঠে না। মানসিক চাপের সময় পছন্দের এই কাজগুলো আবার শুরু করুন এবং কাজগুলোর মাধ্যমে নিজেকে সময় দিন।

মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান করতে পারেন। ধ্যানের সময় গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম শরীরকে শিথিল করে। ধ্যান আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি চাপ কমাতে যোগব্যায়ামও করতে পারেন।
নিজেকে শান্ত রাখা জরুরি। মনকে শিথিল রাখতে হালকা ধাঁচের গান শুনুন। আর শরীরকে শিথিল রাখতে স্নান করতে পারেন। পার্লারে বা স্যালুনে গিয়ে মানসিক চাপ কমাতে পারে এ রকম ম্যাসাজ করান।

সন্তানের বাইরে নিজের একটি আলাদা জগৎ তৈরি করুন। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন, কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে যান। 

ঘন ঘন চা-কফি খাওয়ার অভ্যেস ছাড়ুন। কেননা এসবে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন থাকে। ক্যাফেইন খুব দ্রুত আপনার ইন্দ্রিয়কে সজাগ করে তোলে এবং মানসিক চাপ বর্ধক হরমোনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে।

তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারের প্রতি অতিরিক্ত আবেগী মনোভাব দূর করা উচিত। তুচ্ছ কারণে উত্তেজিত হবেন না। পরিবারের সব সদস্যদের সাথে মিলে কাজের চাপ ভাগাভাগি করে বাড়ির ছোট্ট শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় আনন্দের সাথে বড় করে তুলুন।

- ফাবিহা ফারজিন